সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী সুফলভোগীর তালিকায় নাম থাকলেও গরু পায়নি সবিতা রানী ও ক্ষিতীশ তির্কী!

- আপডেট সময় : ১১:৪৫:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫ ২৯ বার পড়া হয়েছে

সিরাজগঞ্জ জেলা বিশেষ প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর সুফলভোগীরা তালিকায় নাম থাকলেও গরু পায়নি! এমটিই হলেছে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্টীর দুই সুফলভোগীর জীবনে ! তালিকায় নাম থাকার পরও গরু পান নি সবিতা রানী ও ক্ষিতীশ তির্কী। কারা নিয়ে গেলো তাদের নামে বরাদ্দকৃত অনুদানের গরু দুইটি! বিশেষ করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে ঘুরে-ঘুরেও তাদের অভিযোগের প্রতিকার মিলছে না।
এদিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় বিএনপি দলীয় নেতৃবৃন্দ সুফলভোগীদের তালিকা দিয়েছেন। আমরা সেভাবে গরু বিতরণ করেছি। এখন দেখছি তালিকাভুক্ত দুইজন সুফলভোগী গরু পান নি। এ দায় তাদেরও নিতে হবে।
তালম ইউনিয়নের মানিক চাপড় গ্রামের ভুক্তভোগী ক্ষিতীশ তির্কী বলেন, গরু বিতরণের তালিকার জাবতীয় তথ্য আমার দেওয়া রয়েছে। তবে মোবাইল নাম্বারটা আমার না। গরু বিতরণ সম্পর্কে আমাকে কিছুই জানানো হয় নি। পরে আমি জানতে পারি ‘আমার গরু অন্য কেউ নিয়ে গেছে।’
তাড়াশের মাধাইনগড় ইউনিয়নের ক্ষিরপোতা গ্রামের বাসুদেব সরকারের স্ত্রী সবিতা রানী বলেন, গরু বিতরণের তালিকায় জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার আমার। নাম পাল্টে সবিতা রানীর স্থলে সনজিতা রানী নাম দেওয়া হয়েছে। আমার স্বামী বাসুদের সরকারের নামের স্থলে দেবাসিস সরকার নাম দেওয়া হয়েছে। মোবাইল নাম্বার অন্যকারো। আমাদের ক্ষিরপোতা গ্রামে সনজিদা, দেবাসিস সরকার নামে কোনো মানুষের বসবাস করে না। ভুয়া নাম ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে।
সবিতা রানীর স্বামী বাসুদেব সরকার বলেন, গরু বিতরণের আগের রাতেও তালিকায় হুবহু আমাদের নাম ঠিকানা ছিলো। সকালে গরু আনতে গিয়ে দেখি ‘আমার স্ত্রী সবিতা রানীকে সনজিতা রানী করা হয়েছে। আমাকে করা হয়েছে দেবাসিস সরকার।’ শুধু আমার স্ত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরটা ঠিক রয়েছে। সরকারি ছুটি শেষে সোমবার দিন লিখিত অভিযোগ দায়ের করবো।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় সমতল ভুমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর আর্থ সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্বাচিত ৯০ জন সুফলভোগীদের মাঝে প্যাকেজ ভিত্তিক বকনা বাছুর বিতরণ করা হয় বুধবার (৩০ এপ্রিল)।
অপরদিকে গরু বিতরণ শেষ হতেই রতন কুমার সিং নামে এক সুফলভোগী গরু না পাওয়ার অভিযোগ করেন। পরে তাকে গরু দেওয়া হয়। তারা রানী নামে আরেকজন অভিযোগ করেন, তালিকায় দুই তারা রানীর নাম রয়েছে। এক তারা রানী গরু পেয়েছেন, আমি পাই নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি দু:খজনক। ক্ষুদ্র নৃ গোষ্টীর সুফলভোগীদের গরু নিলো কারা, ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির উপদেষ্টা খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর বলেন, তাড়াশ উপজেলায় কতিপয় নেতৃবৃন্দ আগেও অনৈতিক কর্মকান্ড করেছেন, এখনও করে যাচ্ছেন। এতে দলের ভাবমুর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য হাই কমান্ডের কাছে দাবি জানাচ্ছি। দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে অনৈতিক কাজের কোনো সুযোগ নেই।